নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে ভোট গ্রহণের দুই দিন আগ থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে রাখার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন। ভোট গ্রহণের দুইদিন আগে, ভোট গ্রহণের দিন এবং পরের দুই দিন অর্থাৎ মোট পাঁচ দিন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে রাখতে পারে ইসি। এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২২ ডিসেম্বর থেকে সারা দেশে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালাতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে এবং সহিংসতা ঠেকাতে পূর্ব প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে সারা দেশে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালানো হবে।
একই সঙ্গে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবে সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ সদস্যরা। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় হতে জেলা পর্যায়ে নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছানো এবং জেলা হতে উপজেলা ও উপজেলা হতে ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী সহায়তাও নেওয়া হতে পারে।
নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় মহানগর এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১৮ থেকে ২০ জন ও বাইরে ১৪ থেকে ১৬ জন সদস্য মোতায়েন করার প্রস্তাব রাখছে ইসি। এছাড়া বিশেষ এলাকায় (পার্বত্য, দ্বীপাঞ্চল, হাওড়) ১৭ থেকে ১৮ জন আইন-শৃঙ্খলার সদস্য রাখা হবে। শুক্রবার জেলা প্রশাসকদের উপস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলার বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স
নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে স্ট্রাইটিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, র্যাব, আর্মড পুলিশ নিয়োগ করা হবে। ব্যাটালিয়ন আনসার সহযোগী ফোর্স হিসেবে পুলিশের সঙ্গে মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করবে।
আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় সেল
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ১ জানুয়ারি সকাল ১০টা থেকে আইন শৃঙ্খলা সমন্বয় সেল স্থাপন করা হবে। এই সেলে একজন করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবেন।
ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তার সঙ্গে নির্বাচনী দ্রব্যাদি ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা প্রেরণ হতে ফলাফল নিরাপদে প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ
ভোট গ্রহণের দিন নির্বাচনী সামগ্রীসহ ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য এবং ভোট গণনার ফলাফলসহ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসারের অফিসে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা করা হবে।
যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
৪ জানুয়ারি মধ্যরাত হতে ভোট গ্রহণের দিন মধ্যরাত পযর্ন্ত নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের যন্ত্রচালিত যানবাহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে। একই সঙ্গে ইঞ্জিনবোর্ড এবং স্পিডবোর্ড চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। এছাড়া বিশেষ করে ৩ জানুয়ারি মধ্যরাত হতে ৭ জানুয়ারি মধ্যরাত পযর্ন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন নিষিদ্ধকরণ
লাইসেন্সধারীরা যাতে নির্বাচনী এলাকায় অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করতে না পারে সেজন্য ২২ ডিসেম্বর হতে ৭ জানুয়ারি পযর্ন্ত বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হবে। এ ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করবে।
নির্বাচনী প্রচারণা নিষেধাজ্ঞা
৩ জানুয়ারি রাত ১২টার পরে সকল ধরনের প্রচার প্রচারণা নিষিদ্ধ থাকবে। এসময় নির্বাচনী এলাকায় সভা, সমাবেশ, মিছিল ও শোভাযাত্র নিষিদ্ধ থাকবে। একই সঙ্গে ভোটগ্রহণের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা বিজয় মিছিলের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা থাকছে।
মনিটারিং সেল
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্বেক্ষণের জন্য ১ জানুয়ারি থেকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে ও রিটার্নিং অফিসারের কাযার্লয়ে মনিটরিং সেল খোলা হবে।
নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ
নিজ নিজ দায়িত্ব প্রাপ্ত এলাকার সামগ্রিক নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তা বিধানে সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ইত্যাদি নিয়োগের দায়িত্ত্বে থাকবেন রিটানিং কর্মকর্তা। তবে নির্বাচনী এলাকার মোবাইল স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার এবং মহানগরন এলাকায় পুলিশ কমিশনার রিটানিং কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে এ সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবেন।