আমেরিকার একটি ফেডারেল আপিল আদালত সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলার বিচার কাজ আবারও শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে। ৯/১১ নামে পরিচিত ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে এ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মামলা দায়েরের এক যুগেরও বেশি সময় পরে এ নির্দেশ দিলো ফেডারেল আপিল আদালত।
আট বছর আগে নিম্ন ফেডারেল আপিল আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল, সৌদি আরবের বিরুদ্ধে মামলার দায়মুক্তি কার্যকর রয়েছে।
কিন্তু ম্যানহাটনের সেকেন্ড ইউএস মার্কিন কোর্ট অব আপিল গতকাল বলেছে, ৯/১১ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সৌদি আরবের বিরুদ্ধে মার্কিন আদালতে ক্ষতিপূরণের মামলা করতে পারবে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ৯/১১ সন্ত্রাসী ঘটনাবলীর আগে আল কায়দাকে সমর্থন জুগিয়েছে সৌদি আরব। এবং এসব ঘটনায় প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।
বাদীপক্ষের প্রতিনিধিত্বকারী পেনসিলভানিয়ার আইন সংস্থা কোজেন ও’কোননোর আইনজীবী স্টিফেন কোজেন বলেছেন, এ দৃষ্টিভঙ্গি যথার্থ এবং ৯/১১ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো তা আদালতে উপস্থাপন করতে পারবে।
আদালতের এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন উইলিয়াম ডোয়েল। তিনি বলেন, এ ঘটনা সম্পর্কে অনেকে তথ্য ও আলামত তার কাছে আছে। ৯/১১ ঘটনায় ডোয়েলের ২৫ বছর বয়সী ছেলে নিহত হয়েছিলেন।
৯/১১ ঘটনায় অংশগ্রহণকারী ১৯ জনের মধ্যে ১৫ জনই সৌদি নাগরিক। ছিনতাই করা বিমান নিয়ে তারা নিউ ইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র, ওয়াশিংটন ডিসি’র পেন্টাগনে হামলা চালিয়েছিল। এছাড়া হামলার চেষ্টা করার সময় তাদের
একটি ছিনতাই করা যাত্রীবাহী বিমান পেনসিলভানিয়ার মাঠে বিধ্বস্ত হয়।
অবশ্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর অনেকেই মনে করেন, কেবল বিমান হামলায় বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের টুইন টাওয়ার ধ্বংস হয়নি; বরং কন্ট্রোলড ডেমোলিশন নামে পরিচিত ভবন ধ্বংসের কাজে ব্যবহৃত নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে ওই ভবন দুটি ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনার সঙ্গে ইহুদিবাদী ইসরাইলের যোগসাজশের কথাও অনেকে বলে থাকেন।
সমালোচকরা বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে অন্যান্য জিনিসের পাশাপাশি দুটি বোমা পাতা ছিল, যা ওই ভবন দুটিকে ধ্বংস করেছে। এছাড়া এ ঘটনার সময় ইহুদিবাদী ইসরাইলের উল্লসিত গোয়েন্দারা আলোকচিত্র গ্রহণ করছিল। এছাড়া ঘটনার আগের দিন টুইন টাওয়ারে কর্মরত ইসরাইলিদের সেখানে না যাওয়ার জন্য হুশিয়ার করে দিয়েছিল ইহুদিবাদী ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ।
৯/১১ ঘটনায় মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র ভূমিকার কথা জানিয়েছেন সিআইএ’র সাবেক গোয়েন্দা সুসান লনডাউর। তিনি বলেছেন, এ হামলার কয়েক মাস আগে থেকেই সিআইএ বিস্তারিত জানত কখন এবং কীভাবে হামলা হবে।