Home / আন্তর্জাতিক / বারাক ওবামার হুশিয়ারি

বারাক ওবামার হুশিয়ারি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বৃহস্পতিবার অবিলম্বে দক্ষিণ সুদানে চলমান সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। দেশটি গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে বলে তিনি হুশিয়ারি জানিয়েছেন।
এর আগে ওবামা জানান, সুদানে মার্কিন জনগণ ও স্বার্থরক্ষায় তিনি সহিংসতা কবলিত দেশটিতে বুধবার বেশকিছু সৈন্য মোতায়েন করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, সুদানে সাম্প্রতিক ভয়াবহ সহিংসতা দেশটিকে আবার তার ফেলে আসা কালো দিনগুলোতে নিয়ে যেতে পারে। সুদানে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা বিশ্বের নবীনতম দেশটিকে গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট এক বিবৃতিতে আরও বলেন, রাজনৈতিক সুবিধা অর্জন বা সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য চলমান এই সংঘাত অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। উত্তেজক বাগাড়ম্বর ও সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিবদমান সব পক্ষকে তার প্রতিবেশীদের সুপরামর্শ মেনে চলতে, পরস্পরের সঙ্গে সংলাপে বসতে এবং শান্তি ও পুনরেকত্রীকরণের জন্য আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র খুব বেশি জরুরি কাজে নিয়োজিত ছাড়া তার সব দূতাবাস কর্মীকে দক্ষিণ সুদান ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দক্ষিণ সুদানের রাজধানী জুবায় অবস্থিত মার্কিন মিশনের সব স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতিগত নুয়ের যুবকরা জংলি রাজ্যে অবস্থিত জাতিসংঘের ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে শান্তিরক্ষী বাহিনীর ৩ ভারতীয় সদস্যকে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় আরও নিহতের ঘটনা ঘটেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ওবামা বলেছেন, দক্ষিণ সুদানের এই সঙ্কট থেকে উত্তরণের সুযোগ রয়েছে। দেশটির নেতারা এই সহিংসতার অবসান ঘটিয়ে উত্তেজনার শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক সমাধানের জন্য একত্রে কাজ করতে পারেন। এই মার্কিন নেতা বলেন, দক্ষিণ সুদানে এরই মধ্যে অনেক রক্ত ঝরেছে এবং অনেক প্রাণহানি ঘটেছে। তিনি সুদানের জনগণের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য দেশটিতে শান্তি ও একতা ফিরিয়ে আনতে সাহসিকতার পরিচয় দিতে নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে বিশ্বের নবীনতম রাষ্ট্র দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘের একটি শরণার্থী শিবিরে সশস্ত্র হামলায় তিন ভারতীয় শান্তিরক্ষী প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার ভোরে দেশটির জঙলেই প্রদেশের আকোবা এলাকায় জাতিসংঘের এই শরণার্থী শিবিরে হামলা চালায় বিদ্রোহীরা।
জাতিসংঘে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অশোক মুখোপাধ্যায় জানান, বিদ্রোহীরা প্রত্যেকেই দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী নুয়েরের সদস্য বলে জানা গেছে। এদিন ভোরে এ হামলার সময় শিবিরে উপস্থিত ছিলেন ৪৩ জন ভারতীয় শান্তিরক্ষীসহ আরও ৮ জন। হামলাকারীদের লক্ষ্য ছিল দিনকা গোষ্ঠীর শরণার্থীরা।
জাতিসংঘ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা অবিলম্বে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলেও বিদ্রোহীদের হুশিয়ার করে দেয়। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব জান এলিয়াসন জানিয়েছেন, জঙলেই প্রদেশে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ সুদানে গত পাঁচ দিন ধরে চলা সংঘর্ষে ইতোমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছে পাঁচশ’রও বেশি মানুষ। প্রাণ বাঁচাতে জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
এদিকে দক্ষিণ সুদানে বিদ্রোহীরা গুরুত্বপূর্ণ বোর শহর দখল করে নিয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ফিলিপ অগার বলেছেন, আমাদের সেনারা রিয়েক ম্যাকারের বাহিনীর কাছে বোর শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট সালভা কির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়েক ম্যাকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ করেছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ম্যাকার। দক্ষিণ সুদানে রোববারের ‘অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা’র পর চলতে থাকা লড়াইয়ের মধ্যে রাজধানী জুবায় নিহত হয়েছে অন্তত ৫শ’ মানুষ। আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে সংঘর্ষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার। দক্ষিণ সুদানের স্বাধীনতার পর থেকেই কয়েকটি বিদ্রোহী দল হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে। এ দলগুলোরই কোনো একটি বোর শহর দখলের অভিযানে জড়িত।
দেশটির দুটি প্রধান জাতিগত দল প্রেসিডেন্ট কিরের দিনকা এবং ম্যাকারের নুয়ের জাতিগত দলের মধ্যে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ।

আজকের নিউজ আপনাদের জন্য নতুন রুপে ফিরে এসেছে। সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। - আজকের নিউজ