Home / অর্থনীতি ও বানিজ্য / ২০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে ফিরে যেতে পারেন পাকিস্তানের বিনিয়োগকারীরা

২০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে ফিরে যেতে পারেন পাকিস্তানের বিনিয়োগকারীরা

বাংলাদেশে ১০ হাজারের বেশি পাকিস্তানি নাগরিক কয়েক শ’ কোটি ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে এখন অনিশ্চয়তায়। ’৭১ সালের যুদ্ধাপরাধী আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পরবর্তী পরিস্থিতির কারণে তারা এখন বাংলাদেশে এ বিশাল বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা করছেন। অবশ্য বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী পাকিস্তানের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি পাকিস্তানের বিনিয়োগকারীদের জন্য কিছুটা ঝুঁকি সৃষ্টি করলেও সর্বোপরি সেটা পাকিস্তানের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হয়ে দেখা দেবে। তারা বলছেন- বাংলাদেশে এ পরিস্থিতি যদি দীর্ঘায়িত হয় তাহলে একদিকে বাংলাদেশে পাকিস্তানি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হবে। অন্যদিকে ইইউ থেকে ঘোষিত জিএসপি প্লাস স্ট্যাটাস সুবিধা পেতে তাদেরকে দেশে ফিরে যেতে উদ্বুদ্ধ করবে। বাংলাদেশে পাকিস্তানি বিনিয়োগকারীরা কোন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন এমন কোন অভিযোগ এখনো পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পায়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। নির্বাচনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী ড. সালমান শাহও একমত পোষণ করেছেন যে, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি পাকিস্তানের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে। তবে সেটা অল্প সময়ের জন্য বলে তিনি মনে করছেন। তিনি মনে করছেন এটা বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রচারণারই অংশবিশেষ। তিনি বলেছেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিবৃতি উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। আর এ ধরনের বিদ্বেষমূলক পরিস্থিতির যদি বিস্তার ঘটে তাহলে পাকিস্তানি বিনিয়োগকারীরা দেশে ফিরে যেতে পারে। পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক কনসালট্যান্ট সাকিব শেরানি বলেছেন- বাংলাদেশে পাকিস্তানি বিনিয়োগকারীদের জন্য পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক। তবে সেখানকার কোন পাকিস্তানি ব্যবসায়ীকে এখনো কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানা যায়নি। তিনি বলেন- তাদের মাঝে উদ্বেগ থাকলেও এখনো কেউ ক্ষতির শিকার হননি। শেরানি বলেন- হরতাল অবরোধের কারণে বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারি হিসাব মতে দেশের বাইরে পাকিস্তানিদের প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা রয়েছে। এর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছে বাংলাদেশে। এর কারণ হচ্ছে এখানে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। তিনি বলেন- বাংলাদেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কম হওয়ার আরেকটি ইতিবাচক দিক হচ্ছে এতে আন্তর্জাতিক বাজারে পাকিস্তানি পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে পারে। নিজেদের রপ্তানি বাড়াতে পাকিস্তান এ সুযোগকে কাজে লাগাতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সহ-সভাপতি সুহাইল আলতাফ বলেছেন- বাংলাদেশে বস্ত্র, চামড়া এবং তৈরী পোশাক খাতে পাকিস্তানিদের ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ রয়েছে। জিএসপি প্লাস স্ট্যাটাসের সুবিধার জন্য পাকিস্তানে তাদের বিনিয়োগও বেশ আকর্ষণীয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের এ বিনিয়োগ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন- বাংলাদেশের পরিস্থিতিই যদি একই রকম থাকে। সেখানে পাকিস্তানের সম্পদ এবং বিনিয়োগকারীদের জীবনের উপর হুমকি থাকলে তাদের বিনিয়োগ দেশে ফিরে যেতে পারে।

আজকের নিউজ আপনাদের জন্য নতুন রুপে ফিরে এসেছে। সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। - আজকের নিউজ