নাটোরের বড়াইগ্রামে নাটোর-পাবনা মহাসড়কে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এক হাতে পিস্তল ও অন্য হাতে দা নিয়ে গাছের ডালপালা কেটে গাছ সরালেন। এ সময় তার সঙ্গে বিপুল সংখ্যক র্যা ব, পুলিশও কাজ করেন। ঈশ্বরদী থেকে ঢাকায় ফেরার পথে অবরোধের কবলে পড়লে তিনি এ কাজ করেন।
জেলা পুলিশ জানা যায়, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী রোববার সকালে পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মানাধীন পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে পাবনা-নাটোর সড়ক হয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন। পুলিশ পাহারায় সকাল সাড়ে ১০য় তার গাড়ি বড়াইগ্রাম উপজেলার ধানাইদহ এলাকায় এসে অবরোধের মুখে পড়ে। অবরোধকারীরা আগেই সেখানে বড় আকৃতির একাধিক গাছ ফেলে রাখায় পুরো সড়ক বন্ধ হয়েছিল। সঙ্গে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাকে অন্য রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু তাতে তিনি রাজি হননি। বাম হাতে পিস্তল উঁচিয়ে গাড়ি থেকে নামেন। এরপর নিজেই গাছের ডালপালা সরাতে শুরু করেন।
খবর পেয়ে বড়াইগ্রাম ও লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পাঁচগাড়ি পুলিশ ও দুই গাড়ি র্যা বসদস্য সেখানে হাজির হয়। এলাকার লোকজনের কাছ থেকে দা, কুড়াল ও করাত এনে সবাই একযোগে গাছ সরানোর কাজে যোগ দেন। আধা ঘণ্টা চেষ্টার পর মন্ত্রীর গাড়ি পার করা হয়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা থানায় গাছ কাটার জন্য মটরচালিত করাত সরবরাহের দাবি জানালে তিনি চাহিদা পত্র দেয়ার পরামর্শ দেন। তিন কিলোমিটার যেতেই তার গাড়ি আবারো লালপুর উপজেলার দাঁইড়পাড়া এলাকায় অবরোধকারীদের ফেলে রাখা দুইটি গাছে আটকে যায়। আবারো গাড়ি থেকে নেমে ২০ মিনিট চেষ্টার পর গাছ সরিয়ে সেখান থেকে পার হন। পরে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ অতিরিক্ত পুলিশ পাহারায় তাকে বনপাড়া-হাটিকুমরুল সড়ক হয়ে সিরাজগঞ্জ এলাকায় পৌঁছে দেয়।
লতিফ সিদ্দিকি বলেন, “আমি ইচ্ছা করলে অন্য রাস্তা হয়ে ঢাকায় ফিরতে পারতাম। কিন্তু তাতে দুর্বৃত্তরা (অবরোধকারীরা) উৎসাহ পেতো। এ পরিস্থিতিতে প্রশাসনের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তাহলে আমার মতো কেউ দুর্ভোগে পড়বে না।”
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইব্রাহিম হোসেন ও লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “অবরোধকারীরা সড়কে আচমকা গাছ ফেলে সটকে পড়ে। এই পরিস্থিতির জন্য আমরা বিব্রতবোধ করছি।”
এদিকে অবরোধে মিছিল সমাবেশ করে ১৮-দল। রোববার সন্ধ্যায় শহরের বড়হরিশপুর বাইপাস মোড়ে পুলিশ পাহারায় গাড়ি পার করার সময় একটি গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। এ সময় ১৮ দলের নেতারা পুলিশকে অবরোধ ঠেকাতে মাঠে না নামার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “এরপর কোনো গাড়ি পার করতে পুলিশ দেখা গেলে তাদেরও ছাড় দেয়া হবে না।”